মদিনা শরীফে উৎপন্ন এক জাতীয় উৎকৃষ্ট মানের খেজুর ‘আযওয়া’। সবচেয়ে দামি ও আশ্চর্যধরণের উপকারি খেজুর এটি। আমাদের দেশে আযওয়া খেজুর অনেকটা দুষ্প্রাপ্য। তবে আমদানিকৃত খেজুর সংগ্রহ করতে হলে আপনাকে প্রতি কেজিতে ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা গুণতে হবে।
পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণনা অনুযায়ী আযওয়া ‘জান্নাতি ফল’। অত্যন্ত সুমিষ্ট ও বহু উপকারি খেজুর আযওয়া। পৃথিবীর জমিনে আযওয়া
খেজুরের উৎপন্ন শুরু হয় আমাদের প্রিয় নবী নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ
হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এক মোজেযা প্রকাশের
মাধ্যমে। তিনি এক রাতে নিজ হাতে খেজুরের বীজ রোপন করেন এবং মহান আল্লাহ পাক
উনার কুদরতে ওই রাতে বীজ থেকে চারা হয়ে বড় গাছ হয়ে যায় এবং ওই রাতেই
গাছগুলোতে খেজুর ধরে পেকে কালো বর্ণ ধারণ করে। এই খেজুরই হচ্ছে সেই আযওয়া
খেজুর। এ খেজুরের আশ্চর্যজনক একটি গুণ হলো এটি যাদুটোনা থেকে মুক্ত করে ও
বিষকে পানি করে দেয়।
আযওয়া খেজুর সম্পর্কে রসুল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হাদীছ শরীফ-
হযরত সা’দ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি সকাল বেলা ৫টি বা ৭টি আজওয়া খেজুর খাবে, সেদিন কোন বিষ বা যাদু-টোনা তার কোনো ক্ষতি করতে পারবেনা। (বুখারী শরীফ: ৫৩৫৭)
আযওয়া খেজুরের
কার্যকারিতা :
হৃদরোগ : হজরত
সায়ীদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, একদা আমি
অসুস্থ হয়ে পড়লে
রসুলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে দেখতে তাশরিফ নিয়ে এলেন। রসুলে
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পবিত্র হাতের শীতলতা আমার
অন্তর পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল। অতঃপর রসুলে আকরাম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ
ফরমালেন- 'তুমি হৃদরোগে আক্রান্ত। হারেস ইবনে
কালদাহ
সাকি্বফীর কাছে যাও। কারণ সে একজন চিকিৎসক। সে যেন মদিনার সাতটি আজওয়া খেজুর নিয়ে বীজসহ পিশে তোমার মুখে ঢেলে দেয়।'
-আবু দাউদ,
মিশকাত।
বিষক্রিয়া বন্ধে
: আজওয়া খেজুর বিষের কার্যক্ষমতা কমাতে বিশেষভাবে
কার্যকর। এই
সম্পর্কে রসুল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ ফরমাইছেন,
'আজওয়া জান্নাতের
ফল। এর মধ্যে বিষের নিরাময় রয়েছে।' তিরমিজি, মিশকাতুল মাসাবিহ। 'হজরত সা'আদ ইবনে
আবু ওয়াক্কাস রদ্বিয়াল্লাহু
তায়ালা আনহুবর্ণনা করেন, রসুল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন,
যে ব্যক্তি প্রতিদিন
সকালে সাতটি আজওয়া খেজুর খাবে, সে দিন বিষ এবং জাদু তার কোনো
ক্ষতি করতে
পারবে না।' বুখারি শরিফ।
শক্তি বর্ধনে :
খেজুর শারীরিক ও মানসিক শক্তিবর্ধক। খেজুরে রয়েছে প্রচুর
পরিমাণে খাদ্য
উপাদান যা শারীরিক ও মানসিক শক্তি বৃদ্ধিসহ হজম শক্তি,
শারীরিক শক্তি ও
রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করে। এ সম্পর্কে উম্মুল মু’মীনিন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত হয়েছে,
'রসুলে পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাসিস পছন্দ করতেন।' হাসিস তিনটি
উপাদানযোগে
প্রস্তুত যা হচ্ছে (১) খেজুর (২) মাখন (৩) জমাট দই। এটা
শারীরিক
ও মানসিক শক্তি বর্ধক।
Comments
Post a Comment